Mon. Sep 9th, 2024

পাচারের অর্থ ফেরাতে টাস্কফোর্স গঠন হচ্ছে

দেশ থেকে পাচার করা টাকা ফেরত আনতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার টাস্কফোর্স গঠন করবে। গঠনের কাজ, টাস্কফোর্সে কারা থাকবেন এবং এর কার্যক্রমের পরিধি নির্ধারণের কাজ মোটামুটি শেষ পর্যায়ে। তাদের নাম এ মুহূর্তে বলা যাবে না। তবে টাস্কফোর্সের কার্যক্রম দ্রুতই দৃশ্যমান হবে।

রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ইপিবি এবং বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটের পর্ষদ সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

কবে নাগাদ অর্থ উদ্ধার সম্ভব জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা সোজা (সহজ) নয়। দেশের টাকা যে পাচার হয়েছে, এটা জানতেই ১৬ বছর লেগেছে। এখন আনতে ১৬ বছর লাগবে না। অনেক তাড়াতাড়ি হবে। যারা কাজ করবে, তারা এক্সপার্ট (দক্ষ)। তবে কত টাকা পাচার হয়েছে, এ বিষয়ে তিনি কোনো উত্তর দেননি। যারা টাকা পাচার করেছেন, তাদের স্থানীয় সম্পদ বিক্রি করে সমন্বয় করা হবে যোগ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, এটি পাচারের অর্থ উদ্ধার প্রক্রিয়ার একটি অংশ। তবে জোর করে নয়, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসব সম্পদ সমন্বয় করা হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাসের অর্জন সম্পর্কে এ উপদেষ্টা বলেন, ব্যাংকিং খাতে কনফিডেন্সের (আস্থার) অভাব ছিল। এ খাতে আস্থা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এনবিআর ইমিডিয়েটলি (অতিসত্বর) একটি টাস্কফোর্স কবে। বিদেশে অনেক বাঙালি যোগ্য বিশেষজ্ঞ আছে, প্রয়োজনে তাদের কাজে লাগানো হবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, চলতি অর্থবছরে সম্ভাব্য রপ্তানি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ১২.৪০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। অবস্থা মোটামুটি ভালো, ইতিবাচক। আশা করি এটা হবে। তিনি আরও বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আগের চেয়ে অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এ কারণে রপ্তানি আয় আগের চেয়ে কমবে না, বরং বেশি হবে। আর রপ্তানির ক্ষেত্রে যেসব বাধা আছে-রেগুলেটরি, ট্যাক্সসংক্রান্ত, সেগুলো রিভিউ করব। রপ্তানি যেন ডাইভারসিফাইড (বহুমুখীকরণ) করা হয়, সেটা আমাদের লক্ষ্য।

জিএসপি সুবিধা প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, এ সুবিধার জন্য এরই মধ্যে তাদের বলা হয়েছে। আমরা আবার চেষ্টা করব। আশা করি, যুক্তরাষ্ট্র সবদিক থেকে আমাদের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টি রাখবে। অতএব জিএসপিটা পজিটিভ। তবে এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র কিছু শর্ত না কোয়ারি দিয়েছে, তার উত্তর দিয়েছি। এ মাসেই ওয়াশিংটন যাব, সেখানে তাদের সঙ্গে ফেস টু ফেস (সামনাসামনি) কথা হবে। কী কী শর্ত আছে, তা নিয়ে বিস্তারিত কথা হবে।

সরকারের এক মাসে বাজার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে তিনি বলেন, আলু ও পেঁয়াজের কর তুলে দেওয় হয়েছে। এর ফলে বাজারে দাম কমে যাবে না, রিফ্লেক্ট (প্রতিফলন) করতে সময় লাগে। মিডলম্যান ও চাঁদাবাজি কমানোর জন্য চেষ্টা করছি। স্থানীয় প্রশাসনকে বলেছি মনিটরিং জোরদার করতে। আবার বেশি চাপাচাপি করলে ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হবে। ভোক্তার যেন কষ্ট না হয়, সেজন্য ব্যবসায়ীদের বলেছি বেশি প্রফিট (লাভ) করা যাবে না।

২০২৫ সালের বাণিজ্যমেলা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, জানুয়ারিতেই বাণিজ্যমেলা হবে। শুরুতেই না হলেও কাছাকাছি তারিখেই হবে। এবার মেলায় ইনোভেটিভ (উদ্ভাবনী) দিক থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা এক্সপোর্ট (রপ্তানি) করে বা এক্সপোর্ট পটেনশিয়ালটি (রপ্তানি সম্ভাবনা) আছে, তাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করব। আমরা দেশীয় পণ্যের এক্সপোর্ট (রপ্তানি) এনকারেজ (উৎসাহিত) করব।

এ সময় শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা, বাণিজ্য সচিব মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, অর্থ সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী, আইসিসিবির প্রেসিডেন্ট মাহবুবুর রহমান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।

আরও দেখুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *