আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এরইমধ্যে ৭০ জনেরও বেশি কর্মকর্তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে। তবে প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদ মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ এখনও বাতিল হয়নি। তার নিয়োগের মেয়াদও প্রায় এক মাসের মতো রয়েছে। তাই প্রশাসনে কানাঘুষা চলছে, মন্ত্রিপরিষদ সচিব কি তার মেয়াদ পূর্ণ করেই বিদায় নেবেন?
তবে সার্বিক পরিস্থিতিতে যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব স্বস্তিতে নেই সেটা নির্দ্বিধায় বলা যায়। সেটা তিনি নিজেও বলেছেন।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার কিছু পর প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া বাকি ২৫ ক্যাডারের ১৯৪ জন ‘বঞ্চিত’ উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতির দাবি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কক্ষে যান। দাবি পূরণে তারা মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সহযোগিতা চান।
চাকরির শেষ পর্যায়ে এসে আমি খুবই অস্বস্তিতে আছি, এটা তো আপনারা বোঝেন।-মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন
মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কক্ষে যাওয়া একাধিক উপসচিব বলেন, কথাবার্তার একপর্যায়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, চাকরির শেষ পর্যায়ে এসে আমি খুবই অস্বস্তিতে আছি, এটা তো আপনারা বোঝেন।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘কর্মকর্তারা পদোন্নতির জন্য এসএসবির (সুপিয়র সিলেকশন বোর্ডের) সভা ডাকার অনুরোধ করলে মাহবুব হোসেন বলেন, প্রস্তাব তো জনপ্রশাসন সচিব আমাকে দেবেন। উনি প্রস্তুত কি না আমি তো জানি না। এছাড়া উনি আমার সিনিয়র। মেজবাহ (আগের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, গত ২৮ আগস্ট ওএসডি হয়েছেন) থাকলে আমি তাকে অনানুষ্ঠানিকভাবে বলতে পারতাম।’
আগামী ১৩ অক্টোবর মাহবুব হোসেনের এক বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সেই হিসাবে তার চাকরির মেয়াদ রয়েছে আরও ২৫ দিন।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী হলেও মাহবুব হোসেন অন্যদের মতো অতটা বেপরোয়া ছিলেন না। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ পদগুলোতে সবাই নতুন হলে কাজের ক্ষেত্রেও সমস্যা হতে পারে। সেই হিসেবে এখন পর্যন্ত প্রশাসনের সর্বোচ্চ এ কর্মকর্তার স্বাভাবিক বিদায় চাইছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এরমধ্যে অন্যরকম কিছু না ঘটলে আগামী ১৩ অক্টোবর বিদায় নেবেন মাহবুব হোসেন।