দেশের ১০ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। পূর্বাঞ্চলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলের মানুষ গত তিন দশকে এমন বন্যা দেখেনি। নজিরবিহীন বন্যায় এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মৌলভীবাজার, খাগড়াছড়ি, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লক্ষ্মীপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এসব এলাকার সাড়ে ৩৬ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। টানা বৃষ্টিপাত ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে এসব অঞ্চলে পানি বেড়েই চলেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা ও ফেনী অংশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৫ কিলোমিটার মহাসড়ক এক থেকে দেড়ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। কুমিল্লায় তিনজন মারা গেছে। কুমিল্লা, ফেনী ও নোয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ।
গত ৩৬ বছরে ফেনীতে এ ধরনের ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়নি। এবারের বন্যায় ফেনীর তিনটি উপজেলার ৯০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়ে সবকিছু লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ১০ জেলার ৬৫টি উপজেলার ৪৯৫টি ইউনিয়ন বন্যার কবলে পড়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মোট ৮২ হাজার ৬৯৪ জন মানুষ এবং ৭ হাজার ৭৫৫টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। বন্যায় সড়ক ও রেলপথ তলিয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামের সাথে সারা দেশের রেল ও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে কক্সবাজারের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
কুমিল্লা: কুমিল্লা, ফেনীসহ আশপাশের জেলার বিভিন্ন উপজেলা টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে ধেয়ে আসা পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। ক্রমেই ফুঁসে উঠেছে এতদাঞ্চলের নদ-নদী। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা ও ফেনী অংশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৫ কিলোমিটার মহাসড়ক এক থেকে দেড়ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। মহাসড়কে কচ্ছপ গতিতে যানবাহন চলছে। এতে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টিসহ যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্গতদের জন্য কুমিল্লা-ফেনীসহ আশপাশের এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আকস্মিক বন্যায় ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া প্লাবিত হয়েছে। এই তিন উপজেলার শতাধিক গ্রাম, পানিবন্দী লক্ষাধিক মানুষের হাহাকারে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠেছে। কুমিল্লায় বৃষ্টির মধ্যে একজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে, একজনের মাথায় গাছ পড়ে ও একজন পানিতে তলিয়ে মারা গেছেন। বন্যা আক্রান্ত এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, মেডিকেল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে জেলা-উপজেলা প্রশাসন। এদিকে দুর্গত এলাকাসমূহের মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ রয়েছে। অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুতের সংযোগও বন্ধ। বর্তমান বন্যা পরিস্থিতিতে ফেনী, কুমিল্লাসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার ডাক, টেলিযোগাযোগ বিভাগের আওতাধীন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এ ছাড়া বিটিআরসি, বিটিসিএল ও টেলিটক ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম গঠন করেছে। বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানির সহায়তায় ১০টি ভি-স্যাট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তার মধ্যে পাঁচটি ভি-স্যাট ফেনীর জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
আতঙ্কে বাড়িঘর ছাড়ছেন জেলার গোমতী, কাঁকড়ি, ডাকাতিয়া, ঘুংগুর নদীর আশপাশসহ জেলার নিচু এলাকার মানুষেরা। প্রায় ১১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে গোমতীর পানি। গোমতী নদীর চরগুলো প্লাবিত হয়ে শত শত বাড়িঘর পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার কটকবাজার থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত ৮৫ কিলোমিটার গোমতী বাঁধের দুর্বল অংশ ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকা দেখা দেয়ায় নদীসংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
গেল পাঁচ দিনে কুমিল্লায় ৩৪০ মিলিমিটার ও গেল ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত হয়ছে ৮৬ মিলিমিটার হয়েছে। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড গোমতীর দুই তীরে নাজুক অবস্থায় থাকা স্থানগুলো মেরামতের কাজ করছে। গোমতীর বিভিন্ন অংশে ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো স্থানীয়রা বালির বস্তা দিয়ে মেরামত করতে দেখা যায়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও দুর্গত মানুষের সেবায় কাজ করছেন। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাঁকড়ি নদীর বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ। ভেসে গেছে বিভিন্ন মাছের প্রজেক্ট, দীঘি ও পুকুর। গোমতীতে গত ১৫ বছরেও উজান থেকে আসা এতো পানি দেখা যায়নি। নদীর বাঁধ এলাকায় পাউবোর একাধিক টিম বাঁধ পর্যবেক্ষণে আছে।
ফেনীর ৩ উপজেলা প্লাবিত, জনজীবন বিপর্যস্ত: ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার থেকে এ তিন উপজেলাসহ সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলার কিছু এলাকায় বিদ্যুত্ পুরোপুরি সংযোগ বন্ধ করা দেওয়া হয়।
এই তিনটি উপজেলার শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী। বাড়িঘর, গ্রামীণ সব সড়ক, ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। মহাসড়কের অংশ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চালকরা আতঙ্কে ধীরে ধীরে গাড়ি চালাচ্ছেন। বন্যায় ওই তিনটি উপজেলার ৯০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়ে সবকিছু লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। স্বেচ্ছাসেবীরা ডিঙি নৌকায় করে পানিবন্দী মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যান। বন্যার কারণে ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কসহ স্থানীয় সব গ্রামীণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম ও ফেনীর বিভিন্ন স্থানে হাঁটু পানি, কোথাও তারও বেশী পানি। ফেনীর লালপুল এলাকায় অন্তত ৯ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ডুবেছে। বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের ২৪টি বোট নিয়োজিত রয়েছে। তাদের পাশাপাশি বিজিবি, ফায়ারসার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবীরাও উদ্ধার তত্পরতায় যোগ দিয়েছেন। তবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় এবং পানির প্রবল স্রোতের কারণে উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে বানভাসি মানুষের বাঁচার আকুতি প্রবল হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার বিপত্সীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল ফেনীর মুহুরী নদীর পানি।
চট্টগ্রামের তিন উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, মিরসরাই, ফটিকছড়ি ও সীতাকুন্ড উপজেলায় কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এই তিন উপজেলায় ১১২টি গ্রাম সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়েছে। তবে মিরসরাই ও ফটিকছড়িতে বন্যা আক্রান্ত গ্রামের সংখ্যা বেশি। এছাড়া হাটহাজারী, রাউজান ও বোয়ালখালী উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। হালদা ও মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যায় সড়ক ও রেলপথ তলিয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামের সাথে সারা দেশের রেল ও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, ফটিকছড়ি উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের প্রায় সব গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফটিকছড়ি থেকে হেঁয়াকো রামগড় সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় খাগড়াছড়ির সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। মীরসরাই উপজেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে পানি উঠে গেছে।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি বিপত্সীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে ঈদগাঁওর ফুলেশ্বরী, বাঁকখালী, মাতামুহুরী নদীতে। বৃহসপতিবার ভোররাত হতে নদীর দুই তীর উপচে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে ঢলের পানি। এতে নদীর তীর ও বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে কক্সবাজারের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে পর্যটকসহ যাত্রীরা। এদিকে, ভয়াবহ বন্যা দেখা দিতে পারে কক্সবাজারের ঈদগাঁও, সদর, রামু, উখিয়া, চকরিয়া-পেকুয়ায়। প্লাবিত হচ্ছে বিভিন্ন উপজেলার অন্তত দু’শতাধিক গ্রাম। এতে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সবচেয়ে বেশি পানিবন্দি এলাকা রামু ও ঈদগাঁও উপজেলা। কক্সবাজার-টেকনাফ-উখিয়া হাইওয়ের অনেক এলাকা পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে।
রামুর তিন ইউনিয়নের লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান বলেন, বাঁকখালী নদীতে ঢল নামায় পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে ইউনিয়নের ২০ থেকে ২৫টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে রয়েছে। পাহাড়ি ঢলে ফুলেশ্বরী নদীর একাধিক পয়েন্টে বেড়িবাঁধে ভাঙন ধরেছে। সেসব স্থান দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকে ঈদগাঁও বাজারসহ প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে ৮টি উপজেলায় চারদিকে পানি আর পানি। শহরে বিদ্যুত্ থাকলেও গ্রামে বিদ্যুত্ নেই বললে চলে। গ্রামীণ ও শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থার বিপর্যয় ঘটেছে। জেলা অভ্যন্তরে রেললাইন কয়েক ফুট পানির নিচে তলিয়ে আছে। যে কোন সময় জেলার সঙ্গে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়েছে যেতে পারে। গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ১২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এদিকে বন্যা পরিস্থির অবনতি হওয়ায় জেলা সদর, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী, চাটখিল, বেগমগঞ্জ, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ ও সুবর্ণচর উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মানুষ ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে
ভয়াবহ আকার ধারণ করছে বন্যা। ইতিমধ্যে পানিবন্দি হয়ে আছে কয়েক লাখ মানুষ। কুশিয়ারা নদী, মনু, ধলাই ও জুড়ী নদীর পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে বইছে। এতে প্লাবিত হয়েছে শত শত গ্রাম। গত দুই দিনে ১৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সোমবার ভোরে মৌলভীবাজার সদর, রাজনগর, কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় ৫ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ৩ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মৌলভীবাজার শহর রক্ষা বাঁধের উপর দিয়ে পানি উপচে পড়ছে। এতে নাগরিকদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, ভয়ানকভাবে পানি বাড়ছে। নদ-নদীর বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে।
খোয়াই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। শহররক্ষা বাঁধও হুমকিতে পড়েছে। শহরতলীর জালালাবাদ গ্রামের পাশে খোয়াই নদীর বাঁধের ভাঙ্গন দিয়ে প্রবল বেগে হাওরে পানি প্রবেশ করছে। ক্রমান্বয়ে ভাঙ্গনটিও বড় হচ্ছে। তবে চুনারুঘাট উপজেলার বাল্লা সীমান্ত পয়েন্ট থেকে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় খোয়াই নদীর বাঁধের বিভিন্ন স্থানে স্থানে খোয়াই নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশংকা রয়েছে ।
হাওড়া নদীর বাঁধ বেঙে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বেড়েছে পানি। নতুন করে আরো বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ইটনা ও মোগড়া ইউনিয়নের খলাপাড়া এলাকায় হাওড়া নদীর বাঁধ বেঙে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে।
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের কালীনগর গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে ৫-৬টি গ্রামের পাঁচ সহস্রাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
লক্ষ্মীপুরের সর্বত্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। একইসঙ্গে মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারে উপকূলের বিস্তীর্ণ জনপদ প্লাবিত হচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারণ হিসেবে খাল দখলমুক্ত ও উপকূল প্লাবিতের ঘটনায় নদী তীর রক্ষা বাঁধ না থাকাকে দুষছেন স্থানীয়রা। সকাল থেকে পুরো জেলায় হালকা থেকে মাঝারি আকারের বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। রায়পুরে টানা ভারি বর্ষণে প্রায় ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বিদ্যুত্ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নে ফেনী নদীর পানি ঢুকে প্রায় ৪ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়ে গেছে।
সুনামগঞ্জের সবকয়টি নদীর পানি বিপসীমার নীচে। কেবল সিলেটের সীমান্তবর্তী ভারতীয় সীমানার অমলসিদ পয়েন্ট থেকে ভাটির দিকে প্রবাহিত কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়েছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীলরা বলেছেন, সুনামগঞ্জে বন্যার শংকা নেই
দুইদিন বৃষ্টিপাতের মাত্রা কম থাকায় চেঙ্গী, মাইনী, ফেনী, পিলাক ও ধুরুং নদীতে পানি কিছুটা কমার পর অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে ফিরলেও বৃষ্টিতে আবারো বন্যা কবলিত হয়েছে জেলার অন্তত দেড় শতাধিক পাড়া গ্রাম। জেলা শহরের আশ পাশের পাড়া গ্রামসহ শহরের প্রধার সড়কগগুলো বন্যার পানিতে ডুবে আছে।