বিগত কয়েক বছরের মতো ডলার ও রিজার্ভ সংকট কাটাতে ও বাজেটের অর্থ সংস্থানের জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে দর-কষাকষি চলছে। চলতি অর্থবছরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রত্যাশা ১৩০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা।
সূত্র বলছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন অর্থ বিভাগ এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কাজ করছেন। ইতোমধ্যে উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে অনেকেই প্রাথমিক আশ্বাস দিয়েছে।
ইআরডির কর্মকর্তারা বলছেন, উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাজেট সহায়তা পেতে আলোচনা অব্যাহত আছে। আমরা বিশ্বব্যাংকের কাছে ৫০ কোটি ডলার, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছে ৪০ কোটি ডলার, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) কাছে ২০ কোটি ডলার এবং কোরিয়ার কাছে ১০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা চেয়েছি। এসব নিয়ে আলোচনা চলছে। এ ছাড়া জাপানের কাছে বাজেট সহায়তা চাওয়া হয়েছে। তারা আশ্বাস দিয়েছে, তবে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়নি। তাদের কাছে ১০ কোটি ডলার প্রত্যাশা করছি।
ঋণদাতা সংস্থাগুলো বাজেট সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের শর্ত জুড়ে দেয়। এসব শর্ত পূরণ করলেই কেবল অর্থ মেলে। মোটা দাগে সব সংস্থার শর্ত প্রায় একই রকম। অন্যতম শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে রাজস্ব ও ব্যাংক খাতসহ আর্থিক খাতের সংস্কার, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আইনি সংস্কার, ভর্তুকি ও কর ছাড় কমানো এবং বিভিন্ন খাতে বড় ধরনের সংস্কার করা।
অর্থ বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা ঋণ পরিশোধে সব সময় ভালো করেছি। এজন্য আমাদের প্রস্তাবের বিপরীতে তাদের কাছ থেকে প্রাথমিক আশ্বাস পাওয়া গেছে। এখনও বিষয়গুলো চূড়ান্ত হয়নি। আলোচনার মাধ্যমে তা চূড়ান্ত করা হবে। আমরা ১৩০ কোটি ডলার প্রত্যাশা করছি, তবে চূড়ান্ত অর্থের পরিমাণ দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে।’
ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরুতে বাজেট সহায়তার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ১২০ কোটি ডলার। পরবর্তী সময়ে রিজার্ভ পরিস্থিতি বিবেচনায় সহায়তার পরিমাণ বাড়িয়ে ২০০ কোটি ডলার করা হয়েছিল। অর্থাৎ পরিস্থিতি বিবেচনায় বাজেট সহায়তার পরিমাণ বাড়াতে পারে সরকার।
অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে আরও ঋণ সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে গেছে। এটি কাটিয়ে উঠতে ঋণের প্রয়োজন। বকেয়া ঋণ মেটাতে স্থানীয় ব্যাংক থেকেও ডলার কেনা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত দেড় বিলিয়ন ডলার এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকার কাছে আরও এক বিলিয়ন ডলার করে চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে আরও তিন বিলিয়ন ডলার পেতে আলোচনা চলছে বলে জানান গভর্নর। ইতোমধ্যে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রতিশ্রুতির তিন কিস্তির অর্থ পেয়েছে বাংলাদেশ।
গেল সপ্তাহে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদের